১৯৮০ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে টেস্ট ম্যাচ খেলা নিয়ে উত্তেজনা চরমে ছিল। জয়ের জন্য ক্যারিবিয়ান দলের প্রয়োজন ছিল ১০৪ রান। এই ম্যাচে দুর্বল আম্পায়ারিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল আগেই কেঁপে উঠেছিল। ম্যাচটিতে ছিল খুব উত্তেজনাপূর্ণ মোড়। জয় কার পক্ষে যাবে বলা কঠিন হয়ে পড়েছিল। তবে, ক্যারিবিয়ান দলের ভয়ঙ্কর ফাস্ট বোলারদের গতিতে আসা বল দেখে আতঙ্কে ছিলেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। ‘হুইস্পারিং ডেথ’ নামে পরিচিত মাইকেল হোল্ডিং তার লম্বা পদক্ষেপে ব্যাটসম্যানের দিকে এগিয়ে যেতেন।
হোল্ডিংয়ের পেস বল জন পার্কারের ব্যাটের ভেতরের প্রান্তে লেগে যায় এবং শেষ হয় কিপারের গ্লাভসে। পুরো ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল একজোট হয়ে উচ্চস্বরে আবেদন করেছিল, কিন্তু আম্পায়াররা টস থেকে নড়েনি। এরপর মাঠে যা ঘটল তা এই ম্যাচটিকে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম বিতর্কিত ম্যাচ করে তুলেছে।
আম্পায়ারের নট আউট দেওয়ার সিদ্ধান্তে মাইকেল হোল্ডিং পুরোপুরি হতবাক হয়ে যান। ব্যাটসম্যান তার ব্যাটিং গ্লাভস খুলে প্যাভিলিয়নের দিকে ঘুরতে শুরু করেছিলেন, এমনকি ব্যাটটিকে পাশে রেখেছিলেন বলে জানা যায়। এই কারণেই আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে হতবাক হোল্ডিং। ক্যারিবিয়ান বোলার তার ফলোথ্রুতে দৌড়ে গিয়ে স্টাম্পে লাথি মারেন।
বলা হয় হোল্ডিংয়ের ক্ষোভের আরেকটি কারণ ছিল। আসলে, এই ঘটনার আগে হোল্ডিংয়ের একটি বল ব্যাটসম্যান লার্স কেয়ার্নসের স্টাম্পে আঘাত করেছিল। কিন্তু আম্পায়ার তাকে আউট ঘোষণা করেননি, কারণ উইকেটের বেইল পড়েনি। এছাড়াও, হোল্ডিং ইতিমধ্যেই দুর্বল আম্পায়ারিং নিয়ে রাগান্বিত ছিলেন। হোল্ডিং স্টাম্পে লাথি মারলে মাঠের সবাই হতবাক হয়ে যায়।
সেই সঙ্গে হোল্ডিংয়ের হাত থেকে বেরিয়ে আসা পরের বলটা কতটা বিপজ্জনক হবে তা নিয়েও নার্ভাস হয়ে পড়ছিলেন ব্যাটসম্যান। মাইকেল হোল্ডিংয়ের আচরণ এবং দুর্বল আম্পায়ারিংয়ের কারণে এই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ড দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে বেশ উত্তেজনা দেখা দেয়। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর উপস্থাপনায় পুরস্কার নিতে আসেননি দুই দলের খেলোয়াড়রা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং নিউজিল্যান্ড উভয় দেশের খেলোয়াড়রা এটি বয়কট করেছিল।