এবারে কাতারে ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের (FIFA Football Worldcup) আসর ২২তম। বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে মোট ৩২টি দেশ। একদিকে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকোর মতো আমেরিকান দেশ। অন্যদিকে, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স কিংবা ইংল্যান্ডের মত দেশ বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব হওয়ার লড়াইয়ে উঠে পড়ে লেগেছেন ফুটবলাররা।
কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপে ভারত অংশ না থাকলেও ভারতে রয়েছে অগুনতি ফুটবল ভক্ত। অনেক ফুটবলপ্রেমী রাত জেগে ম্যাচের হার-জিত উপভোগ করছেন। মেসি, নেইমার, রোনাল্ডোদের মত ক্রিকেটারদের পায়ের স্কিল উপভোগ করছেন।
আমরা আপনাকে বলি, ১৯৩০ সাল থেকে ফুটবল বিশ্বকাপের (Football Worldcup 1930) আয়োজন করছে ফিফা। এখনও পর্যন্ত বিশ্ব ফুটবলের চূড়ান্ত পর্যায়ে যেতে পারেনি ভারত। ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীরাও কখনও বিশ্বকাপে নিজের দেশের জন্য গলা ফাটাতে পারেননি। অবশ্য ভারত স্বাধীন হওয়ার পর সেই সুযোগ এসেছিল এক বার। ১৯৫০ সালে ফিফার আয়োজিত বিশ্বকাপে ভারত খেলার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ডাক পেয়েও বিশ্বকাপ খেলতে যায়নি ভারতীয় দল। যেন তারা হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলে দিয়েছিল।
এখন প্রশ্ন হল কেন? কী সেই কারণ, যার জন্য বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেয়েও প্রস্তব ফিরিয়ে দেয় ভারত? যদিও প্রশ্নের উত্তর আজও বিভিন্নরকম। এ বিষয়ে অনেকের অনেক মতামত। আসল কারণ ঠিক কি তা নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোন দিন সামনে আসেনি।
ভক্তদের একাংশ মনে করেন, বিশ্বকাপে ভারতের না খেলার প্রধান কারণ ছিল ‘সু’। ফিফার নিয়ম ছিল জুতো পরে খেলতে হবে, কিন্তু সেই সময় ভারতীয় ফুটবলাররা ‘সু’ পড়ে খেলতে অভ্যস্ত ছিলেন না। যার কারনে তারা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল। কিন্তু এই যুক্তি কতটা গ্রহণযোগ্য, তা নিয়ে অনেকের সন্দেহ রয়েছে।
জানিয়ে দি, ১৯৪৮ সালের অলিম্পিকে দুর্দান্ত প্রদর্শন করেছিল ভারতীয় দল। লন্ডনে তাঁদের খেলা নজর কেড়েছিল সকলের। তার ঠিক ২ বছর পর ফিফা আয়োজিত ফুটবল বিশ্বকাপ খেলার জন্য ব্রাজিলে ডাক পায় ভারত (FIFA Worldcup Chance India)। বলা হচ্ছে, সেই সময় লন্ডন অলিম্পিকের ম্যাচগুলিতে খালি পায়েই খেলেছিলেন ভারতের ফুটবলাররা। কোন খেলোয়ার ‘সু’ পড়েছিলেন না। ভারতের সেটাই প্রথম কোনও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া। সেই সময় ফিলিপিন্স, ইন্দোনেশিয়া এবং বর্মা দেশগুলি যখন নিজে থেকেই ফিফাকে না করেছিল তখন এক মাত্র এশীয় দল হিসাবে ভারতকে ডাক দেয় ফিফা।
আবার অনেকে মনে করেন, ব্রাজিলে খেলতে যাওয়ার মতো সেই সময় আর্থিক সামর্থ্য ভারতের যথেষ্ট ছিল না। তাই তাদের দেশ থেকেই বিশ্বকাপ খেলতে পাঠানো হয়নি। তবে এটি যুক্তিপূর্ণ না। কারণ, ফিফা ভারতীয় ফুটবলারদের জন্য যাত্রা সংক্রান্ত খরচ বহন করবে বলেছিল।
যাইহোক, ভারত বিশ্বকাপে খেলতে গেলে দলকে নেতৃত্ব দিতেন বাঙালি ফুটবলার শৈলেন মান্না। তিনি এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ফিফা বিশ্বকাপকে অলিম্পিকের মতো গুরুত্বই দেয়নি ভারতের ফুটবল ফেডারেশন। যার কারণে সুযোগ পেয়েও ভারতকে হাতছাড়া করতে হয়েছিল। এই ইতিহাস নিয়ে ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীরা আজও আফসোস করেন। আজ ফুটবল বিশ্বকাপের আসর ৭২ বছর কেটে গেলেও আর মেলেনি এই সুযোগ।